Loading Now

আ’লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সম্ভাবনা নেই: বরিশালে আসিফ নজরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধটা উইথড্র হবে এরকম কোনো সম্ভাবনা দেখতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

বুধবার (১ অক্টোবর) দুপুরে বরিশাল নগরীর শংকর মঠের দুর্গা পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন আইন উপদেষ্টা।

সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, উনি (প্রধান উপদেষ্টা) যেটা বলেছেন সেটা থিউরিটিক্যাল কথা বলেছেন। আমি যতটুকু বুঝতে পারি থিউরিটিক্যাললি যখন একটি দলের কার্যক্রম ব্যান করা হয়।

তখন সেটা পারমানেন্ট কি-পারমানেন্ট না একটা প্রশ্ন থাকে। বাস্তবিক অর্থে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধটা উইথড্র হবে এরকম কোনো সম্ভাবনা আমি দেখতেছি না।
তিনি বলেন, আমি যতটুকু জানি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে আমাদের যে প্রসিকিউশন টিম আছে। সেই টিমের পক্ষ থেকে সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার চাওয়ার পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

আসিফ নজরুল বলেন, আমরা দায়িত্ব নেয়ার পূর্বেই বলেছি, আমরা ধর্মীয় সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরুর কোনো ভেদাভেদ করি না। আমরা মনে করি প্রত্যেক ধর্মের মানুষ হচ্ছে বাংলাদেশের নাগরিক। প্রত্যেকের সমমনা অধিকার। ধর্ম পালন ও ধর্ম চর্চার ক্ষেত্রে সমান অধিকার।

এই জন্য সারাদেশে নিরাপদ পরিবেশে পূজা পালন করা হচ্ছে। পূজা পালনের ক্ষেত্রে নানা ধরনের অপশক্তি ও ষড়যন্ত্র থাকে। এ বিষয়ে আমরা প্রথম থেকে অত্যন্ত এলার্ট ছিলাম।
বরিশাল জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন অত্যন্ত তৎপরভাবে দায়িত্বপালন করছেন, রাজনৈতিক দলগুলো সবাই সহযোগিতা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা পালন করা হচ্ছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের পর এক সেকেন্ড-এক ঘণ্টাও থাকার ইচ্ছা আমাদের নাই।

আমাদের দুইটা চিন্তা ছিল-নির্বাচনের আগে বিচারের যে অগ্রগতি বা সংস্কারের দৃশ্যমান অগ্রগতি, সেটুকু যেন হয়ে যায়। কারণ অনেক মানুষ জীবন দিয়েছে। অনেক স্যাক্রিফাইস এখানে আছে। সেই লক্ষ্যে আমরা মনে করি বিচারের দৃশ্যমান প্রক্রিয়া তো হয়েই গেছে। আমরা আশা করছি আগামী নির্বাচনের আগে আগে কিছু বিচার দেখে যেতে পারব।
আসিফ নজরুল বলেন, আমরা কিন্তু অনেক সংস্কার কাজ করেছি। আইন মন্ত্রণালয়ে ৯ থেকে ১০টি বড় সংস্কার করেছি। প্রথমবারের মতো সিভিল ও ক্রিমিনাল কোর্টকে সম্পূর্ণভাবে আলাদা করা হয়েছে। লিগ্যাল এইড সার্ভিসকে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। লিগ্যাল এইডের সিআরপিসি, সিপিসি এ্যামেন্ডমেন্ট করেছি। অনলাইন বেলবেন্ডর ব্যবস্থা করেছি। ক্রিমিনাল একটা কোর্ট শুধু বিচারই করবে। বিচারিক পদ সৃজন এখন আর সরকার করবে না। এটা সুপ্রীম কোর্ট করবে, প্রধান বিচারপতি করবে। বিচার বিভাগের কর্মচারী নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি হতো। এটা আর জেলা পর্যায়ে হবে না। এটা বিচার প্রশাসন করবে।

ঐক্যমত কমিশন সংস্কার নিয়ে আলাপ করছি জানিয়ে তিনি বলেন, এটা নিয়ে অনেকে মনে করছে সংস্কার কাজ থেমে আছে কিনা। সংস্কার আমরা করছি। এক্যমত কমিশন যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে, সেখানে সংবিধান জড়িত। সংবিধান পরিবর্তন নিয়ে প্রশ্ন আছে বলে সেখানে রাজনৈতিক দলের সংযোগ ছাড়া করা যায় না। সাধারণ অধ্যাদেশ ও সরকারি আদেশ দিয়ে যেগুলো করা সম্ভব, সেগুলো অনেক করে ফেলেছি। বাকি যেটা আছে, ফেব্রুয়ারির আগে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করতে পারব।

পাহাড়ের বিষয়টি অনেক স্পর্শকাতর। এ বিষয়ে কোনো নলেজ নেই জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, আমি যতটুকু জানি আমাদের সরকারের মধ্যে একটা প্রচণ্ড ইনক্লসিভ এটিটিউট আছে। আমরা সবাইকে নিয়ে শান্তিতে-সমৃদ্ধির সাথে নিরাপদে বাস করতে চাই। এখানে ভেদাভেদের যে বিভিন্ন দেয়াল তুলে দেয়া হয়, পাহাড়ি বাঙালি বলে, হিন্দু-খ্রিষ্টান-মুসলমান বলে। আমরা এটা বুঝি আমরা সবাই বাংলাদেশি। বাংলাদেশি হিসেবে সকলের যে অধিকার রয়েছে, শান্তিতে সমৃদ্ধির সাথে বাস করার অধিকার সবার সমান আছে। এটার বিরুদ্ধে যারা বাধা হবে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে। আমরা চেষ্টা করবো সকলে মিলে নিরাপদ থাকার জন্য।

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED