বরিশালে প্রবল বর্ষণে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
বর্ষা মাথায় করে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু বিদায় হবার আগে শেষ আশ্বিনের শুক্র ও শনিবার বরিশালে অঝোরে শ্রাবনের ধারার মত জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শনিবার দুপুর সোয়া ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বরিশালে প্রায় ৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার রাতেও মাত্র দেড় ঘন্টায় ১৫ মিলি বৃষ্টিপাতে দিন শেষে ঘরে ফেরা মানুষের দূর্ভোগের কোন শেষ ছিলনা।
অথচ আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাসে মৌসুমী বায়ু ভূভাগে মোটামুটি সক্রিয় থাকার কথা জানিয়ে বরিশাল সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগরে তা দূর্বল থেকে মাঝারী অবস্থা থাকার কথা বলা হয়েছে।
এদিকে বরিশাল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো ঘুরে দেখা গেছে, টানা বৃষ্টিতে ড্রেন, নালা ও ডোবা পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। অনেক স্থানে জলাবদ্ধতারও তৈরি হয়েছে।
এদিকে একটানা বৃষ্টিতে নগরীর বটতলা নবগ্রাম রোড, মুন্সিগ্যারেজ, বগুড়া রোড, পলিটেকনিক রোড ও ভাটিখানাসহ বেশিরভাগ সড়কে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতার। কোথাও কোথাও বাসা বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করেছে পানি। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী।
অসময়ের এ অতিবর্ষণে তাপমাত্রার পারদও স্বাভাবিকের নিচে নেমে গেছে। তবে এ বৃষ্টিপাত বরিশাল কৃষি অঞ্চল জুড়ে সদ্য রোপা আমনের টেকসই ও স্বাভাবিক জীবন প্রবাহের অনুকুল পরিস্থিতি তৈরী করছে বলে জানা গেছে। চলতি খরিপ-২ মৌসুমে বরিশাল কৃষি অঞ্চলে প্রায় ২৪ লাখ টন আমন চাল ঘরে তোলার লক্ষ্য নিয়ে শতভাগ বীজ রোপন সম্পন্ন করেছেন কৃষিযোদ্ধাগন।
অপরদিকে বরিশাল সহ সব নদী বন্দরগুলোতে দক্ষিন ও দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘন্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ী দমকা ও ঝড়ো হাওয়া সহ বজ্র বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। তবে পায়রা বন্দরের জন্য কোন সতর্কবার্তা নেই।
আবহাওয়া বিভাগের দীর্ঘ মেয়াদী বুলেটিনে গত মাসে বরিশালে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৭% কম, ২০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের কথা জানিয়ে চলতি মাসে ১৮৬ মিলির স্থলে ২শ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের কথা জানান হয়েছে। তবে মাসের প্রথম ১১ দিনেই দেড় শতাধিক মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। অপরদিকে আগামী ১৫ অক্টোবরের পরবর্তি ৫ দিনে বর্ষা মাথায় করে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু বরিশাল সহ সারা দেশ থেকেই বিদায় নেবার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
Post Comment