২০ সাবেক নেতার বিবৃতি: ৭২ বছরের পুরোনো ‘বাকসু’ নামটি বিএম কলেজ ছাড়া কাউকে দেওয়া হবে না
নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
বরিশাল ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (বিসিএসইউ) সংক্ষিপ্ত রূপ ‘বাকসু’, যা গত বাহাত্তর বছর ধরে প্রচলিত, তা আর অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ২০ জন সাবেক ছাত্রনেতা। বৃহস্পতিবার রাতে বিএম কলেজের সাবেক ছাত্রনেতা মজিবুর রহমান নান্টু স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে সাবেক ছাত্রনেতারা বলেন, সম্প্রতি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের খসড়া গঠনতন্ত্রে এর নাম বরিশাল ইউনিভার্সিটি সেন্ট্রাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন (বাকসু) প্রস্তাব করা হয়েছে। এই নামটি ব্রজমোহন কলেজের ঐতিহ্যবাহী ‘বাকসু’ নামের সঙ্গে অভিন্ন এবং উচ্চারণেও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে। দুই প্রতিষ্ঠানের ভৌগোলিক অবস্থানও খুব কাছাকাছি হওয়ায় এ ধরনের নামগত সাদৃশ্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি, ভুল বোঝাবুঝি ও উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে।
সাবেক নেতারা স্মরণ করিয়ে দেন যে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের পেছনেও ব্রজমোহন কলেজের ‘বাকসু’ নেতাদের অগ্রণী ভূমিকা ছিল। তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত হবে তাদের ছাত্র সংসদের নাম এমনভাবে নির্ধারণ করা, যাতে তা ব্রজমোহন কলেজের ঐতিহ্যবাহী নামের সঙ্গে কোনো সংঘাত সৃষ্টি না করে।
‘বাকসু’-এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব
বিবৃতিতে আরও বলা হয়—বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের শিক্ষা, সংস্কৃতি, রাজনীতি ও মুক্তচিন্তার প্রতীক ব্রজমোহন কলেজ ‘দক্ষিণ বাংলার অক্সফোর্ড’ নামে পরিচিত। ব্রজমোহন কলেজে ছাত্রসংসদ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫২ সালে, যা পরবর্তীকালে নামকরণ হয় ব্রজমোহন ইউনিভার্সিটি কলেজ স্টুডেন্ট ইউনিয়ন, সংক্ষেপে ‘বাকসু’।
এই সংগঠনটি শুধু কলেজের ছাত্র-শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষার মঞ্চই ছিল না, এটি দক্ষিণ বাংলার গণআন্দোলনের দিকনির্দেশনা দিয়েছে। ‘বাকসু’ নামটি আজ কেবল একটি সংক্ষিপ্ত রূপ নয়, বরং এটি একটি ঐতিহাসিক পরিচয়, রাজনৈতিক ধারা এবং সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের প্রতীক।
এই সংগঠনের হাত ধরেই অসংখ্য জাতীয় নেতা উঠে এসেছেন, যাঁদের অনেকেই পরবর্তীতে সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও জাতীয় নীতিনির্ধারক হিসেবে বাংলাদেশ গঠনে অবদান রেখেছেন। ব্রজমোহন কলেজের ‘বাকসু’-এর নেতৃত্বেই বরিশালকে বিভাগ হিসেবে ঘোষণা করার আন্দোলন, পদ্মা সেতু নির্মাণের দাবি, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনসহ বহু গণমুখী উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়েছে।
বিবৃতি দেওয়া ২০ সাবেক নেতার মধ্যে অন্যতমরা হলেন মজিবুর রহমান নান্টু, আলী হায়দার বাবুল, আসগার আলী ফকির, সাবেক জিএস ইমাম জাফর শিকদার, সাবেক ভিপি আবদুর রহমান আজিম, সাবেক জিএস বিলকিস জাহান শিরিন, সাবেক জিএস মাহবুবুল হক নান্নু, সাবেক ভিপি আক্তারুজ্জামান শামিম, আবুরেজা মো. মঞ্জুরুল হক জিসান, আবু জাফর বাদল, সাবেক জিএস শেখ নেয়ামুল করিম, সাবেক জিএস মিনার, রেজভী জামান অংকুর, সাবেক ম্যাগাজিন সম্পাদক তরিকুল ইসলাম সাহিন, রবিউল ইসলাম সাহিন, আসাদুজ্জামান রিপন।



Post Comment