Loading Now

আগামী নির্বাচনে নতুন ইতিহাস রচিত হবে: ডা. শফিকুর রহমান

ঝালকাঠি প্রতিনিধি ।।

আগামী জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে নতুন ইতিহাস রচিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। শনিবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে ঝালকাঠির নেছারাবাদ মাদ্রাসা ময়দানে অনুষ্ঠিত জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।

দুপুর সাড়ে ১২টায় নেছারাবাদ দরবার শরিফের বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশ হিযবুল্লাহ জমিয়াতুল মুছলিহিনের উদ্যোগে জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজারো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি, বিভিন্ন ইসলামি দল ও জোটের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘স্বাধীনতার পর আজ পর্যন্ত আমরা একটি সত্যিকারের সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন পাইনি। জনগণ বহুদিন ধরে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তৃষ্ণার্ত। এবার কেউ ভোট ইঞ্জিনিয়ারিং, কেন্দ্র দখল, মেকানিজম কিংবা কোনো অপশক্তির মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন বাস্তবায়নে বাধা দিলে তার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।’

উপস্থিত শ্রোতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা কাউকে ভয় করি না, কারও রক্তচক্ষুকেও পরোয়া করি না। যদি কেউ অন্যায়ভাবে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে আসে তবে আপনাদের বলছি, আপনারা বুলেটের মতো গর্জে উঠবেন। দুষ্ট হাত অবশ করে দেবেন। শুধু ভোটই দেবেন না, আপনারা ভোটের পাহারায়ও কাজ করবেন। আপনার ভোট আপনি দেবেন, আপনার পছন্দের প্রতীকে দেবেন। ভোটের মাধ্যমে দেশের ভাগ্য নির্ধারণ করবে জনগণ। সেই গণ-অধিকার রক্ষা না হওয়া পর্যন্ত বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ নেই। আমি আপনাদের সঙ্গে থেকে এই আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাব। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই থেকে কেউ আমাদের সরাতে পারবে না।’

 

দেশের ধর্মীয় ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আল্লাহর কাছে শুকরিয়া এটি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশ। এ দেশের পাড়া-মহল্লা, অলিগলিতে অসংখ্য অলির লাশ শুয়ে রয়েছে, আবার জীবন্ত অনেক অলি আজও আমাদের মধ্যে আছেন। এ দেশের মানুষের ঘুম ভাঙে ফজরের আজান শুনে, আর ঘুমাতে যায় এশার নামাজ পড়ে। জুমার দিনে মসজিদে জায়গা পাওয়া যায় না—রাস্তায়, ছাদে উপচে পড়া মুসল্লি।’

শফিকুর রহমান দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, ‘এমন একটি দেশে ৫৪ বছরেও আমরা ন্যায়ভিত্তিক শাসন কায়েম করতে পারিনি। এর আগে ২৩ বছরেও পারিনি। এখন পরিবর্তন প্রয়োজন জনগণের শক্তিতে, ইসলামি মূল্যবোধে, ন্যায়ের মাধ্যমে।’

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। তিনি বলেন, ‘ইসলামি রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হতে পারলে আগামী নির্বাচনে দেশের রাজনীতিতে নতুন ইতিহাস রচিত হবে। সম্মিলিতভাবে কাজ করতে পারলে জনগণ একসঙ্গে ভোটের বাক্স রক্ষা করতে পারবে।’

এ ছাড়াও বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসেন, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ইসলামি রাজনৈতিক দলগুলো এক হলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয় সুসংহত করা সম্ভব। জনগণই নির্ধারণ করবে দেশ কোন পথে এগোবে—ন্যায়, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সুবিচারের পথে, নাকি ভিন্ন পথে।

উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ বাংলাদেশ) আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস বরিশাল মহানগর সভাপতি জোবায়ের গালিব, বরিশাল জেলা দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক ও বরিশাল-০৬ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী আবুল হোসেন খান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মুয়াযযম হোসেন হেলাল, পিরোজপুর-২ আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী শামীম সাঈদী প্রমুখ।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন নেছারাবাদী হুজুর মাওলানা খলিলুর রহমান।

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED