Loading Now

ভোলার মেঘনায় ঝাঁকে ঝাঁকে উঠছে পোয়া মাছ

ভোলা প্রতিনিধি ।।

ভোলার মেঘনা নদীতে শীতের হাওয়া লাগতেই ইলিশ কমে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে পোয়া মাছ। জেলেদের জালে ইলিশ মিলছে হাতে গোনা। ঘাটে কেনাবেচায় দাম কম হলেও বাজারে এসব পোয়া দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। গতকাল শনিবার তজুমদ্দিন উপজেলার চর জহিরুদ্দিন ও আজ রোববার ভোলা সদর উপজেলার মাছঘাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

ভোলা জেলা মৎস্য কার্যালয়ের তথ্যমতে, পোয়া মাছকে স্থানীয়ভাবে ‘পোয়া’ বা ‘পামা’ নামেও ডাকা হয়। বড় পোয়া মাছের বায়ুথলি শুকিয়ে ওষুধ তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়, এ কারণে এর বিশেষ মূল্যও আছে।

জেলেদের ভাষ্য, ১০ থেকে ১৫ দিন ধরে মেঘনার মধ্যবর্তী চরের আশপাশে পোয়া বেশি পড়ছে। এলাকাগুলোর মধ্যে আছে বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাকিমউদ্দিনসংলগ্ন চর, দৌলতখান উপজেলার পাতারখাল ও হাজিপুর চর, তজুমদ্দিন উপজেলার চর রায়াহান, চরমোজাম্মেল, চর জহিরুদ্দিন এবং মনপুরা উপজেলার কলাতলী।

এই দুই দিনে দেখা যায় চর জহিরুদ্দিনের বিভিন্ন ঘাটে বর্ষার মতো সরগরম পরিবেশ। জেলেদের নৌকায় মিলছে ঝুড়ি ঝুড়ি পোয়া। সঙ্গে মিলছে কিছু ছোট ইলিশ ও দু-একটি পাঙাশ। মাছ বেশি থাকায় জেলেদের মনে বেশ আনন্দ। তাঁদের কয়েকজনের মুঠোফোনে বাজছিল গান। মাছ বেশি থাকার কারণে ঘাটসংলগ্ন বাজারেও ব্যস্ততা বেড়েছে। কুলি ও আড়তদারদের কমিশনও বেড়েছে।

চর জহিরুদ্দিনের ‘বরিশাল মাছঘাট’-এর ব্যবসায়ী মজিবল হক হাওলাদার বলেন, নৌকাবাসী মানতা সম্প্রদায়ের জেলেরা বাওয়া-পোয়া জালে প্রচুর ছোট সাদা পোয়া শিকার করছেন। একেক জেলে এক থেকে দেড় মণ পর্যন্ত পোয়া পাচ্ছেন। ঘাটে এসব মাছ মণপ্রতি (৪০ কেজি) ৬ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত দরে কেনাবেচা হচ্ছে।

গতকাল বিকেলে জেলে বাহাদুর মাঝি ৫ হাজার ৪০০ টাকার মাছ বিক্রি করেছেন। কামাল মাঝির বিক্রি হয়েছে ১০ হাজার ৯০ ও মিরাজ মাঝির ৫ হাজার ৬০০ টাকার মাছ। গত শুক্রবার নুরে আলম ২৬ হাজার ২৫৫ ও দুলাল পাটওয়ারী ৪০ হাজার ১১৫ টাকার মাছ বিক্রি করেছেন। ব্যবসায়ী সেলিম ব্যাপারী জানান, ঢাকার বাজারে এসব পোয়া ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ভোলার চড়ারমাথা, লালমোহনের বাত্তিরখাল ও ঢালচরের আড়তদারেরা বলেন, নৌকাবাসী মানতা সম্প্রদায়ের জেলেরা নদীর মাছের গতি বুঝে জাল ফেলেন। শীতের শুরুতে পোয়া, তাপসী, বোয়াল, পাঙাশ ও বড় কোরাল ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে এসব মাছ ধরার জন্য আলাদা জাল লাগে—ইলিশের জালে এগুলো কম ধরা পড়ে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসাইন বলেন, ইলিশের প্রজনন মৌসুমে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে গত ২৫ অক্টোবর থেকে জেলেরা মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে নেমেছেন। ইলিশের চেয়ে অন্য মাছই বেশি ধরা পড়ছে। কয়েক দিন বড় বড় পাঙাশ মিললেও এখন আবার পোয়া মাছে ভরপুর। এতে জেলেরা নতুন করে আশাবাদী হচ্ছেন।

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED