বরিশালে ভূমিকম্পে হেলেপড়া ভবন নিয়ে আতঙ্ক
নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
বরিশালে ভূমিকম্পে একটি নতুন ভবনের উপর ১৪ বছরের পুরাতন আরেকটি সাড়ে চারতলা ভবন হেলে পড়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
শুক্রবার সকালের ভূমিকম্পে নগরীর বেলতলা এলাকার মাহামুদিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এরপর থেকেই স্থানীয়রা চরম মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছেন।
এদিকে তদন্তে আইন অমান্য করে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে- তা প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) স্থপতি সাইদুর রহমান লুসান।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ১৪ বছর আগে বিসিসি থেকে চারতলা ভবনের অনুমতি নিয়ে মাহামুদিয়া মাদ্রাসার পাশে সাড়ে ৪ তলা ভবন নির্মাণ করেন আব্দুল মোতালেব হাওলাদার। এই ভবনের পাশে এক বছর আগে প্লান অনুযায়ী চারতলা ভবন নির্মাণ করেন জাহির হাওলাদার। দুটি ভবনেই মালিক এবং ভাড়াটিয়ারা বসবাস করে আসছিলেন।
প্রতিবেশী মো. দুলাল বলেন, একটি ভবন আরেকটির ওপর হেলে পড়ে আছে। এতে এলাকার বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
প্রতিবেশী হারিছুর রহমান স্বপন এবং সাইফুল ইসলাম প্রায় একই সুরে বলেন, যে স্থানে ভবন দুটি নির্মাণ করা হয়েছে সেখানে আগে ডোবা ছিল। সেখানে স্থানীয়রা ময়লা আবর্জনা ফেলত। একটি ভবন আরেকটির উপর হেলে পড়ে থাকায় মৃত্যুঝুঁকিতে আছেন বলে জানান তারা। ভবন নির্মাণে অনিয়ম করা হয়েছে। দুই ভবনের মধ্যে আড়াই ফুট জায়গা রাখার আইন থাকলেও তা অমান্য করা হয়েছে।
চারতলা নতুন ভবনের মালিক জহির হাওলাদারের ছেলে ফাকের হাওলাদার বলেন, এক বছর আগে আমাদের ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। পাশের ভবনটি পুরাতন হওয়ায় আমাদের ভবনের উপর সেটি হেলে পড়েছে। এতে আমরাসহ স্থানীয়রা চরম ঝুঁকিতে রয়েছি। দ্রুত হেলে পড়া ভবন অপসারণের দাবি জানান তিনি।
অপরদিকে হেলেপড়া পুরাতন ভবনের মালিক আব্দুল মোতালেব হাওলাদার বলেন, সকালে বাসা থেকে বের হয়ে দেখি আমার ভবনের ওপর নতুন নির্মাণ করা চারতলা ভবনটি হেলে পড়েছে। হতে পারে গত ২১ নভেম্বর সকালে ভূমিকম্পের সময় ভবনটি হেলে পড়েছে। বিষয়টি বিসিসিকে জানানো হয়েছে, তারা ব্যবস্থা নেবেন।
ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড না মানা এবং প্ল্যান বহির্ভূতভাবে সাড়ে চারতলা ভবন নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) আর্কিটেক্ট (স্থপতি) সাইদুর রহমান লুসান বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছি। ভবন দুটি পাশাপাশি হওয়ায় একটি ভবন হেলে পড়েছে, তা তদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছে না। আমরা নিয়মিত কার্যক্রমে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে দিচ্ছি। তবে মানুষ সচেতন না হলে কোনোভাবেই ভূমিকম্পের ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।



Post Comment