Loading Now

বীরপ্রতীক রতন শরীফের ইন্তেকাল, বিভিন্ন মহলের শোক প্রকাশ

বাবুগঞ্জ প্রতিবেদক ॥

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়নের রাকুদিয়া গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীরপ্রতীক ও দেহেরগতি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রত্তন আলী শরীফ (বীরপ্রতীক রতন শরীফ) আর নেই। তিনি রোববার সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টা ৩০ মিনিটে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

তার ইন্তেকালের খবরে বাবুগঞ্জসহ পুরো এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন মহল তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।বীরপ্রতীক রতন শরীফ ছিলেন একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সৈনিক। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি অসীম সাহসিকতার সঙ্গে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বিমান বাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় তিনি একাধিক দুঃসাহসিক অভিযানে অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব দেন। তার বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে, যা দেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ সামরিক সম্মাননা।

বীরপ্রতীক রতন শরীফের জন্ম ১৯৪৮ সালের ২ জানুয়ারি বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রাকুদিয়া গ্রামে। তিনি ১৯৬৩ সালে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৭২ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের আগে তিনি পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। দেশমাতৃকার ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করেন।
মুক্তিযুদ্ধের পাশাপাশি তিনি স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। দেহেরগতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি এলাকায় উন্নয়ন ও জনসেবামূলক কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা বীর প্রতীক রতন আলী শরীফের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে গুরুতর অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন তার ছেলে শহিদুল ইসলাম শহীদ শরীফ। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল হাসপাতালে ডাক্তারের অবহেলার কারণেই আমার আব্বা বীর প্রতীক রতন আলী শরীফ মারা গেছেন। দেশে অনেকেই ভিআইপি প্রটোকল ও বিশেষ চিকিৎসা সুবিধা পান, কিন্তু একজন বীর প্রতীক হিসেবে আমার বাবা সেই সেবা পাননি কেন? আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। শহিদুল ইসলামের এমন অভিযোগের পর বিষয়টি নিয়ে হাসপাতাল চত্বরে স্বজনদের মাঝে ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারা দ্রুত একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হলে তাৎক্ষণিকভাবে কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর ঘটনায় উত্থাপিত অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া জরুরি।

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED