Loading Now

চলছে অভিযান তবুও দোকানে দোকানে ঠাসা পলিথিনে

বরিশালের কাঁচাবাজারসহ খোলাবাজারে ১ নভেম্বর থেকে পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে পরিবেশ অধিদপ্তর। তিন দিন পেরোলেও তা কার্যকর হতে দেখা যায়নি।

গত দেড় মাস আগে এই পলিথিন নিষিদ্ধের ঘোষণা দিয়েও বাজার থেকে এখনও উঠেনি ক্ষতিকর এই পণ্য। সরকারের নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুল’ দেখিয়ে বরিশালের কাঁচাবাজার থেকে পাড়া-মহল্লায় অবাধে ব্যবহার হচ্ছে পলিথিন। এমনকি অনেক দোকানে বিকল্প ব্যাগ রাখতেও দেখা যায়নি। ফলে ক্রেতাদের পলিথিনে করেই কাঁচাবাজার নিয়ে যেতে দেখা গেছে।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সরেজমিনে বরিশালের পোট রোড বাজার, পুরান বাজার, নতুন বাজার, নথুল্লাবাদ বাস স্ট্রান্ড বাজার, চৌমাথা বাজার, সাগরদী বাজার সহ এসব এলাকার অলিগলি ঘুরে দেখা গেছে, এখনো বাজারে দেদারসে ব্যবহার হচ্ছে পলিথিন ব্যাগ। মুদি দোকান, সবজি বিক্রেতা, মাছ-মাংসের বাজার, খাবারের হোটেলসহ সব স্থানেই ব্যবহার হচ্ছে পলিথিন। বাজারের কোথাও ক্রেতা-বিক্রেতার হাতে দেখা যায়নি পাটের ব্যাগ কিংবা পরিবেশবান্ধব ব্যাগ।

এদিকে বরিশালের শপিংমল গুলোতেও ব্যবহার হচ্ছে পলিথিন। সেখানেও বিকল্প হিসেবে কোন কিছু রাখা হয়নি। ক্রেতারা কেনাকাটা করতে এসে বিপাকে পরছে।

ছোট-বড় সব ব্যবসায়ীরা জানান, পলিথিন বন্ধ হওয়া উচিত, সেটা সবাই জানেন। কিন্তু মানেন না, আগে সবাই কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার করতেন। যখন পলিথিন বের হলো তখন কাপড়ের ব্যাগ চলে গেল। তখন মালামাল নিতে ব্যাগ নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হতো না। ক্রেতারাই ব্যাগ নিয়ে আসতেন। এখন যদি বলি ব্যাগ নেই। তাহলে ক্রেতা চলে যায়। তাই বাধ্য হয়েই পলিথিন রাখতে হয়। আর দীর্ঘ দিনের অভ্যাস তো আর দুই-চার দিনে চলে যাবে না।

 

তারা আরও বলেন, পলিথিন বন্ধ করতে হলে আগে উৎপাদন পর্যায়ে বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া পলিথিনের বিকল্প অন্য কোনো ব্যাগ পাওয়া যাচ্ছে না, কীভাবে দেওয়া হবে। ফলে নিরুপায় হয়ে পলিথিনেই করেই মালামাল দেওয়া হচ্ছে।

সবজি বিক্রেতা শাহে আলম বলেন, পলিথিন নিষিদ্ধ হয়েছে শুনেছি। কী করব ক্রেতারা তো ব্যাগ নিয়ে আসেন না। পলিথিন ছাড়া অন্য কোনো ব্যাগ যে দেব, তার দাম অনেক।

চৌমাথা বাজারের একাধিক মাংস বিক্রেতা বলেন, বাজারে খুব কম মানুষ ব্যাগ নিয়ে আসেন। তাই বাধ্য হয়ে পলিথিন দিই। বাজারে যদি না পাওয়া যেতো তাহলে তো আমরা দিতাম না। সরকার যদি সুলভ মূল্যে ছোট-বড় ব্যাগ দেয়, তাহলে মানুষ কিনবে।

একাধিক পলিথিন বিক্রেতা বলেন, আমাদের স্টকে যে পলিথিন আছে, তা-ই বিক্রি করছি। দুই এক দিন পর আর বিক্রি করতে পারব না। আমরা যদি পাইকারি বাজারে পলিথিন না পাই, তাহলে বিক্রি করব কোথা থেকে। পলিথিন বন্ধ করতে হলে আগে উৎপাদন বন্ধ করতে হবে।

এদিকে পলিথিনের ব্যাগের ব্যবহার বন্ধে বিভিন্ন সুপারশপসহ বাজার গুলোতে মনিটরিং কার্যক্রম চালানো রয়েছে। মনিটরিং কমিটির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, পলিথিনের শপিং ব্যাগ উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে রোববার থেকে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়ছে। কার্যক্রম পরিচালনাকালে মনিটরিং কমিটির সদস্যরা কেনাকাটা করতে আসা লোকজনকে পলিথিন ব্যবহার না করতে অনুরোধ জানান।

বরিশালের জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বাজারগুলোতে আপাতত জরিমানা করা হবে না। সতর্কতামূলক অভিযান চলবে। এর পরের সপ্তাহ থেকে অভিযানে পলিথিনের ব্যাগ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED