ববি’র কোষাধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে শিক্ষকদের মানববন্ধন
নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) নবনিযুক্ত কোষাধ্যক্ষ কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবু হেনা মোস্তফা কামাল খানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন শিক্ষকেরা। এবার তাঁকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন।
তাঁকে অপসারণ না করা হলে কঠোর কর্মসূচি হাতে নেবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। কোষাধ্যক্ষকে অপসারণ করা না হলে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কাজ থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দেন শিক্ষকদের বৃহৎ একটি অংশ। ৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে শিক্ষকদের একটি অংশ মানববন্ধনে অংশ নেন।
এর আগে নবনিযুক্ত কোষাধ্যক্ষ কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবু হেনা মোস্তফা কামাল খানকে দুর্নীতিবাজ ও স্বৈরাচারীর দোসর আখ্যা দিয়ে প্রতিবাদলিপিতে স্বাক্ষর করেন ববির ১৩০ জন শিক্ষক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, ‘যাঁকে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সঙ্গে যান না। তিনি একজন আমলা। এ ছাড়া তিনি (কোষাধ্যক্ষ) দুর্নীতিগ্রস্ত ও ফ্যাসিস্টদের দোসর। আমরা কোনোভাবেই তাঁকে মেনে নিতে পারি না।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাঁকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ব্যবহার করছেন। এ ছাড়া ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এক্সেস নেওয়ার চেষ্টা করছেন, যা কোনোভাবেই কাম্য না।
এ সব বিষয় নিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের সঙ্গে দেখা করেছি। কিন্তু তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি এবং সদুত্তর দেননি। অথচ আমরা ভেবেছিলাম আমাদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে তিনি (উপাচার্য) একাত্মতা প্রকাশ করবেন।’
মানববন্ধনে শিক্ষকরা জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না এমন অপেশাদার একজন আমলাকে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে আমরা মানিনা। এ ছাড়া বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার থাকাকালীন তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে দুর্নীতির অভিযোগ।
বেরোবির সাবেক উপাচার্য কলিমউল্লাহর সহযোগী হিসেবে নানান অভিযোগে বিতর্কিত তিনি (কোষাধ্যক্ষ)। আমরা শুনেছি রাতের আধারে কোষাধ্যক্ষের দপ্তরে কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাঁকে গাড়িও দেওয়া হয়েছে। ঢাকা থেকে তিনি অনলাইনে অফিস করবেন এমন অভিযোগও শুনেছি।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. খোরশেদ আলম, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাদিকুর রহমান, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুব্রত কুমার দাস, সৈয়দ আশিক-ই-ইলাহী, সহযোগী অধ্যাপক সাদেকুর রহমান, মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের জামাল উদ্দীন, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল আলিম বাসের, সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু জিহাদ ও প্রভাষক মোস্তাকিম রহমান প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ নভেম্বর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবু হেনা মোস্তফা কামাল খান। ওই দিন রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন তিনি। তার আগেই যোগদানে বা ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করার জন্য ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।
পরে উপাচার্যের কার্যালয়ে আসেন সদ্য নিয়োগ পাওয়া ট্রেজারার। শিক্ষার্থীরা উপাচার্য কক্ষে ঢুকে ট্রেজারারের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ এনে তাকে যোগদানে বাধা দেন এবং তাঁর সামনেই ক্যাম্পাস থেকে তাঁকে চলে যেতে বলেন।ো
Post Comment