বরিশাল বিএনপিতে নয়া মেরুকরণের আভাস!
নিজস্ব প্রতিবেদক :
বরিশাল মহানগর বিএনপি ও জেলা বিএনপির রাজনৈতিক নয়া মেরুকরণের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। একদিকে নতুন করে বরিশাল দক্ষিণ জেলা কমিটির খসড়া কমিটি কেন্দ্রে জমা দিয়েছে আহবায়ক প্রত্যাশী এস সরফুদ্দীন সান্টু ও সাবেক জেলা সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম রাজন অন্যদিকে মহানগর বিএনপির ৩ সদস্যর কমিটিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে গনতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বরিশালে বিএনপির র্যালীতে সাবেক সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির জাহিদের নেতৃত্বে প্রায় ১০/১২ জন সাবেক কমিটির সদস্য ও ১৩ টি ওয়ার্ডের আহবায়ক কিংবা সদস্যসচিবরা আলাদা শোডাউন দিয়েছেন। সবকিছু মিলিয়ে বরিশাল বিএনপিতে নয়া মেরুকরণ আসন্ন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।গত ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে আবুল হোসেনকে আহবায়ক ও আবুল কালাম শাহীনকে সদস্য সচিব করে বরিশালে দক্ষিণ জেলা বিএনপির কমিটি গঠন করেন বিএনপির হাইকমান্ড। এরপর ৫৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি পুনাঙ্গ আহবায়ক কমিটি গঠন করা হলেও এখন পর্যন্ত কোন উপজেলার কমিটি গঠন করতে পারে নি। অন্যদিকে দীর্ঘদিন বিদেশে অবস্থান করার পর দেশে এসেছেন বিএনপি নেতা সরফুদ্দীন সান্টু ও সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম রাজন। এদের মধ্যে সান্টু বরিশালে বিশাল শোডাউন দিয়ে প্রবেশ করলেও রাজন এখনো বরিশালে আসে নি।গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে সান্টু- রাজন মিলে নতুন করে দক্ষিণ জেলা কমিটি গঠন করতে বিভিন্ন জায়গায় লবিং করছেন।
বরিশাল মহানগর বিএনপির টালমাটাল অবস্থা: গত ৭ জুলাই বরিশাল মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠন হয়।এতে আহবায়ক হিসেবে টানা ২য় বারের মত মনোনীত হন মনিরুজ্জামান ফারুক। এবার পুর্বের সদস্যসচিব মীর জাহিদুল কবির ছিটকে পরেন সেখানে আসীন হন জিয়া উদ্দিন সিকদার। একই সাথে ছাত্রদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক নগর কমিটির সাবেক সদস্য আফরোজা খানম নাসরিন কে ১ নং যুগ্ন আহবায়ক করে কমিটি দেয়া হয়।এরপর দেশব্যাপী শুরু হয় কোটা আন্দোলন। সেখানে আবারও শুরু হয় পুলিশের ধরপাকর। এভাবে গেল আগষ্টে স্বৈরাচার হাসিনা জামানার অবসান হলে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন এ বিএনপি ক্ষমতায় না এলেও বর্তমানে তারাই সর্বত্র বিরাজমান। ফলে বিভিন্ন লাভজনক স্থানে নিজেরা আসীন হন। সুত্র জানায় ৩ নেতার তিন রকম মতভেদের জন্য কমিটির পদপ্রত্যাশী ও বর্তমান ওয়ার্ড কমিটির নেতারা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে।এরা কমিটি ভেঙে নতুন করে মীর জাহিদুল কবির নেতৃত্বে আসবেন এমন ধারণায় আবারো জাহিদের সাথে শোডাউন দিচ্ছেন। একাধিক ওয়ার্ড কমিটির নেতারা দাবী করেন বর্তমান সদস্য সচিব নিজে একা কোরাম করার চেষ্টা করেন আবার কারো দাবী আহবায়ক ও সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক কোন সমস্যা সঠিক নিরসন করতে পারেন না কিংবা তারা একক কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না সদস্য সচিব কে ছাড়া। তাই তারা নতুন নেতৃত্বের আশায় সাবেক সদস্যসচিবকে নিয়ে এগুচ্ছেন । জানা গেছে ৩০ টি ওয়ার্ডের আহবায়ক কমিটির প্রায় ১৩ জন সদস্য সচিব ও ৫/৬ জন আহবায়ক সরাসরি মীর জাহিদ এর নেতৃত্বে অগ্রসরমান।একই সাথে সাবেক আহবায়ক কমিটির প্রায় ২২ জন সদস্য বর্তমানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জাহিদের সাথে সমন্বয় করে রাজনীতি করছেন।একই সাথে এ সকল নেতারা আবার যোগাযোগ ও রাখছেন বর্তমান কমিটির সাথেও।
এক ওয়ার্ড কমিটির সদস্য সচিবের দাবী বর্তমান মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নগরের বিভিন্ন স্থানে তার আত্মীয় স্বজনদের বসিয়েছে অথচ তারা বিগত দিনেও আওয়ামী লীগের কাছ থেকে সুবিধাপ্রাপ্ত ছিল। কিন্তু দলের কোন ছেলেদের দিকে তার খেয়াল নেই। তার কাছে গেলেও তিনি কোন কাজ করেন না।এ অবস্থার পরিবর্তন দরকার।
ঐ দিন সদ্য সাবেক হওয়া নগর বিএনপির সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবিরের কর্মসূচিতে প্রকাশ্যে আসেন সাবেক সভাপতি মজিবর রহমান সরোয়ার এর বিশস্ত আহসান কবির যিনি সাবেক সহ সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়াও বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ন আহবায়ক শহিদুল্লাহ শহীদ,মাকসুদুর রহমান,সদস্য সাইফুল আহসান আজিম,নুরুল আলম ফরিদ সহ আরও ৩/৪ জন এবং ওয়ার্ড কমিটির ১৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য সচিব ইমন,২৪ এর সদস্য সচিব রিয়াজ,২৫ এর সদস্য সচিব নুরে আলম,১৪ এর সদস্য সচিব রিয়াজ,১৩ নং ওয়ার্ডের তারেক,১০ নং ওয়ার্ডের দুলাল,১৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য সচিব সাব্বির, ২৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য সচিব কামাল,২৫ নং ওয়ার্ডের রাজিব মোল্লা উল্লেখযোগ্য। এরা সবাই মনিরুজ্জামান ফারুক ও মীর জাহিদ অনুমোদন দেওয়া কমিটির।
যদিও বিষয়টি সহজ ভাবে দেখছেন বরিশাল মহানগর বিএনপির বর্তমান সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার। মুঠোফোন এ আলাপকালে তিনি জানান, বিএনপির ওয়ার্ড কমিটির বিষয়ে বিগত দিনে অনেক অভিযোগ ছিল। এখন আমরা নতুন করে কমিটি গঠন করবো।কারো সাথে গিয়ে একত্রে তারা তো দলের কর্মসূচিই পালন করছে অন্য কারো নয়।এটা দোষের কিছু নয়।
এ বিষয়ে সাবেক সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির জানান,দলের তৃনমুলই হল প্রাণভোমরা। আমার এই মুহূর্তে দলে কোন পদ নেই কিন্তু দলকে ভালবেসে, দলের সঙ্গে ছিলাম আছি থাকবো।অনেকেই বিভক্ত করার চেষ্টা করে কিন্তু তৃনমুল আমাকে ভালোবাসে।
Post Comment