Loading Now

জলবায়ু বাস্তুচ্যুতি ব্যবস্থাপনা ও পুর্নবাসন প্রক্রিয়া সেমিনার অনুষ্ঠিত

 

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

“সমন্বিত স্থানীয় জলবায়ু বাস্তুচ্যুতি ব্যবস্থাপনা ও পুর্নবাসন প্রক্রিয়া শক্তিশালীকরণ” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টায় নগরীর রিভার ভিউ চাইনিজ রেস্টুরেন্ট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন আইসিডিএ’র প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক ও বর্তমান কার্যকরী পরিষদ’র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার জাহিদ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: কবির হোসেন পাটোয়ারী। বরিশাল জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর’র উপ পরিচালক শামীম চৌধুরি, জেলা মহিলা অধিদপ্তর’র উপ পরিচালক মেহেরুন নাহার মুন্নি।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বরিশাল সদর উপজেলা প্রানিসম্পদ অধিদপ্তর’র উপ সহকারী প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা মো: মহিউদ্দিন খান, জেলা সমাজসেবা কার্যালয় বরিশাল’র সমাজসেবা অফিসার (রেজি:) ইসমত আরা খানম, শাকির আহমেদ সুজন, জুনিয়র অফিসার-বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, দীনা খান, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা, বরিশাল এবং প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স বোর্ডের কাউন্সেলর অশোক বালা।

আইসিডিএ’র বাস্তবায়নে সিসিআরপি প্রকল্পের কমিউনিটি মবিলাইজার মো: আবু হাসনাত হাসিব’র সঞ্চালনায় সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন উন্নয়ন সংগঠক ম্যাপ’র নির্বাহী পরিচালক শুভংকর চক্রবর্তীর, সবুজ আন্দোলন’র আহবায়ক কাজী মিজানুর রহমান, টুঙ্গিবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ’র মহিলা প্যানেল চেয়ারম্যান হিরন বেগম , চড়বাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ’র প্যানেল চেয়্যারম্যান-০১ শাহ আলম।

সমন্বিত সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (আইসিডিএ)’র নির্বাহী পরিচালক কাজী নওশাদ রাসেল’র উপস্থাপিত ধারণা পত্রের আলোকে মুক্ত আলোচনায় আরও অংশ নেন টুঙ্গিবাড়িয়া ইউনিয়ন’র স্থানীয় বাস্তুচ্যুতি পর্যবেক্ষক কমিটির সদস্য এবং বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি মিলন খা, আবুল মোল্লা এবং ভাসমান মান্তা সম্প্রদায় থেকে জুলেখা বেগম ও কালাচান বেগম এবং চরবাড়ীয়া ইউনিয়ন’র স্থানীয় বাস্তুচ্যুতি পর্যবেক্ষক কমিটির সদস্য আফরোজা পারভীন, মিনারা বেগম, ও জামাল ভুইয়া প্রমুখ। প্রত্যেকেই একবিষয়ে সহমত পোষণ করেছেন যে নদী পাড়ের বেড়িবাঁধগুলো টেকসইভাবে নির্মান করা গেলে যেমন নদী ভাঙ্গণ হ্রাস পাবে তেমনি ভূমিহীন হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যাবে। বিশেষ করে টুঙ্গিবাড়িয়া ইউনিয়নের মান্তা সম্প্রদায়ের জুলেখা বেগম বলেন যে, মারা গেলে তাদেঁর দাফন দেওয়ার মতো জায়গাও তাঁদের নেই। তাই এ বিষয়ে সরকারের কাছে আবেদন করেছেন তাদের জন্য যেন স্থায়ী ঘর তৈরি করা হয়।

সেমিনারের বিশেষ অতিথি জেলা মহিলা অধিদপ্তর’র উপ পরিচালক মেহেরুন নাহার মুন্নি তার বক্তব্যে বলেন এটি একটি যুগ উপযোগী সেমিনার, যেখানে বাস্তুচ্যুতদের বিভিন্ন সমস্যা বিভিন্ন প্রশ্ন তাদের জীবন জীবিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাদেঁর সমস্যা গুলো নির্ধারণ করে তার যৌক্তিক সমাধান প্রদান করতে হবে।

সেমিনারের সভাপতি সমন্বিত সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (আইসিডিএ)’র প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক ও বর্তমান কার্যকরী পরিষদ’র সভাপতি আনোয়ার জাহিদ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব খুব ভয়াবহ, এই জলবায়ুর পরিবর্তন মানবসৃষ্ট। এজন্য আমরা নিজেরাই দায়ী। আমরা নিজেরাই পরিবেশের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। সরকার যখন কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করে তখন তা পরিপূর্নভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। এ বিপর্যয় ঠেকাতে আমাদের দায়িত্ব বা কর্তব্য রয়েছে তা সঠিকভাবে পালন না করলে এ সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। অতএব সুবিধাবঞ্চিত মান্তা সম্প্রদায়ের ও বাস্তুচ্যত ব্যক্তিদের উন্নয়নের জন্য সরকারের বিশেষ ভূমিকা পালনের আহবান জানাচ্ছি।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি মো: কবির হোসেন পাটোয়ারী- উপ বন সংরক্ষক, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, বরিশাল তার বক্তব্যে বলেন সেমিনারটি বর্তমান সময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা পালন করছে। স্থাণীয় বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের সাথে সরকারী বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সাথে একটি সেতুবন্ধণ তৈরির কাজ করেছে এই সেমিনার। বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিরাও বাংলাদেশেরই নাগরিক তাদের কথা আমাদের চিন্তা করতে হবে। তাদেরকে দেশের সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে যা যা উদ্যোগ আছে তা গ্রহণ করতে হবে।

সেমিনারে টুঙ্গিবাড়িয়া ও চরবাড়িয়া অঞ্চলের বাস্তুচ্যুতি পর্যবেক্ষক নাগরিক দল দ্বারা তৈরিকৃত অনিবন্ধিত বাস্তুচ্যুতদের তালিকা সেমিনারের বিশেষ অতিথি মো: কবির হোসেন পাটোয়ারী- উপ বন সংরক্ষক, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মহোদয়ের নিকট হস্তান্তর করা হয়।

সবশেষে সেমিনার এর সভাপতি আইসিডিএ কার্যকরী পরিষদ’র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার জাহিদ অতিথি, আলোচক, ও অংশগ্রহণকারীবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়ে সেমিনার কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষনা করেন।

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED