ইমরান খান ও বুশরা বিবির বিয়ে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ
অনলাইন ডেক্স ।।
ইমরান খানের সঙ্গে বুশরা বিবির বিয়ে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন বুশরা বিবির ছোট বোন মরিয়ম রিয়াজ বাত্তু।মূলত তার মধ্যস্থাতেই ইমরান-বুশরার সম্পর্ক বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়।
জিও নিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে মরিয়ম রিয়াজ বাত্তু রাজনীতির পাশাপাশি ইমরান খান ও বুশরা বিবির ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও কথা বলেছেন।
বুশরা বিবির বোন বলেন, বুশরার কাছে কোনো জাদুর কাঠি নেই।এমন ভালো স্ত্রী থাকলে প্রত্যেক স্বামী তার স্ত্রীকে বিশ্বাস করে। বুশরার ধর্ম ও কুরআন সম্পর্কে প্রচুর জ্ঞান রয়েছে, সে কারণেই ইমরান খান তার স্ত্রীর কথা শোনেন এবং তার পরামর্শ মানেন।
সাক্ষাৎকারে বুশরা বিবির বিরুদ্ধে কালা জাদু ও তাবিজের মতো অভিযোগ নিয়েও কথা বলেন মরিয়ম। তার মতে, যারা বুশরার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ তোলে তাদের মানসিক সুস্থ্যতা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মরিয়ম বাত্তু বলেন, আমি ইমরান খানের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বলব না।ভগ্নিপতি হওয়ার আগে তাকে খুব একটা চিনতাম না।
ইমরান খান ও বুশরা বিবির সম্পর্কের শুরু নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মরিয়ম বলেন, সেই সময় আমার মাথায় এমন কিছুই ছিল না। এটি ২০১৫ বা ২০১৬ সালের কথা, যখন আমি তাদের দুজনকে একে অপরের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলাম।
মরিয়ম বাত্তু বলেন, আমি বুশরা বিবিকে অনুরোধ করেছিলাম ইমরান খানকে আধ্যাত্মিক বিষয়ে সাহায্য করার জন্য।কারণ ইমরান খানকে আমার কাছে খুব চিন্তিত মনে হয়েছিল।একবার টিভিতে দেখলাম, খুব খারাপ অবস্থায় তাকে দেখা গেছে।কিন্তু বুশরা বিবি বললেন যে, আমি মিডিয়ায় আসতে চাই না।তিনি ইমরান খানের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকার করেছিলেন, তবে শেষপর্যন্ত আমার পীড়াপীড়িতে রাজি হয়েছিলেন।
তিনি বলেন, তারপর তো আল্লাহও এ সম্পর্ক কবুল করেন। আমি মনে করি তারা এখন সেরা জুটি।যাকে আমি গর্ব করে বলতে পারি বিশ্বের সেরা জুটি।কারণ এত প্রতিকূলতার মধ্যেও তারা একসঙ্গে আছে।
মরিয়ম বাত্তু বলেন, বুশরা বিবির সঙ্গে দেখা করানোর জন্য ইমরান খান আমাকে ইমেইলের মাধ্যমে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন।
সেখানে তিনি লিখেছেন- আমার জীবন পরিবর্তন করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ইমরান-বুশরার বিয়ে হয় ২০১৮ সালে। এর আগে ২০১৪ সালে প্রথম স্ত্রী জেমিমার সঙ্গে ইমরানের বিচ্ছেদ হয়। তাদের সেই বিয়ে টেকে ৯ বছর। এরপর তিনি রেহাম খানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। রেহাম খান ছিলেন একজন ব্রিটিশ-পাকিস্তানি। তিনি সংবাদমাধ্যম বিবিসির আবহাওয়া উপস্থাপক হিসেবে কাজ করতেন।
ইমরান খান ১৩ শতকে নির্মিত এক দরগায় পরামর্শের জন্য গিয়েছিলেন পাঁচ সন্তানের মা বুশরা বিবির কাছে। বুশরা বিবির তখনকার স্বামী ছিলেন খাওয়ার মানেকা। ২০১৭ সালে বিচ্ছেদের আগে তারা ২৮ বছর একসঙ্গে সংসার করেন।
পাকিস্তানে অনেকের ধারণা, বুশরা বিবি সুফি ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত। তবে অন্যরা তা মনে করেন না। বিবিসি জানায়, ইসলামিক রহস্যে ঘেরা সুফিবাদ স্রষ্টার অনুসন্ধান এবং পার্থিব বিষয় ত্যাগের ওপর জোর দেয়। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ইমরান খান এই ধারার প্রতি আগ্রহী।
কথিত আছে, এ সময় একদিন বুশরা বিবি স্বপ্নে দেখেন যে কেবল তাদের বিয়ে হলে ইমরান খান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন। এরপর তারা বিয়ে করেন এবং ছয় মাস পর ইমরান দেশটির প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। বুশরা ২০১৮ সালের অক্টোবরে তার দেওয়া একমাত্র টিভি সাক্ষাৎকারে এ বিষয়টির সত্যতা নাকচ করে দেন।
বুশরাকে নিয়ে এমন গুজব চালু আছে যে তিনি জাদু জানেন এবং মাংস খাওয়া জিনদের একটি বাহিনীকে পালেন।
বুশরাকে বিয়ের পর ইমরান খান দাফনে যোগ দেওয়া বন্ধ করে দেন। তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু বা সহযোগী হলেও দাফনে উপস্থিত হতেন না। অনেকের সন্দেহ, ইমরান খান বিশ্বাস করছেন যে, মৃত ব্যক্তির সঙ্গে একই ঘরে থাকলে দুর্ভাগ্য বাড়বে তার। এমনকি ২০২১ সালে তিনি বেলুচিস্তানে ইসলামিক স্টেটের হাতে নিহত সংখ্যালঘু হাজারা জাতির খনি শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিতর্কিত হন। এসব সংস্কার বুশরার পরামর্শেই ইমরান মেনে চলতেন বলে ধারণা।
এ ছাড়া আরও শোনা যায়, ইমরানের নানা ধরনের ‘কুসংস্কার’ সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার সম্পর্কে প্রথম ফাটলের জন্ম দেয়। যার একটি ছিল গোয়েন্দা প্রধান নিয়োগে তার অতিরিক্ত সময় নেন। পাকিস্তানের এক মন্ত্রীর দাবি, জনৈক নারী (বুশরা বিবি) তাকে উপযুক্ত সময়ে গোয়েন্দা প্রধান নিয়োগের ঘোষণা দিতে বলেছিলেন। যার কারণে বিলম্ব ঘটে। আর এ ফাটল বড় হতে হতে ইমরানের বর্তমান পরিণতি।
Post Comment