Loading Now

অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার, ক্রেতাদের কপালে ভাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

ঈদ ও পহেলা বৈশাখের পর বাজারে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দামে হঠাৎ আবার অস্বস্তি শুরু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম শুনে কপালে ভাজ পড়ছে ক্রেতাদের।

বাজারে সরু চালের দাম আগের চেয়েও কিছুটা বেড়েছে। এদিকে বেড়েই যাচ্ছে সয়াবিন তেল ও পেঁয়াজের দাম। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে বেড়েছে প্রায় ১৫/২০ টাকা। এছাড়া এ সপ্তাহে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে প্রতি লিটারে ১৪ টাকা। আর বেশ আগে থেকে চড়া রয়েছে চালের দাম।

মোটাদাগে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের জন্য এখন বাজারে বেশকিছু পণ্যের দাম অস্বস্তিদায়ক। হুট করে কয়েকটি পণ্যের দাম বাড়ায় তাদের সংসার খরচ বেড়েছে।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বরিশালের বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনটা জানা গেছে।

তবে ঈদের আগে উত্তাপ ছড়ানো মুরগির বাজারে অনেকটা স্বস্তি ফিরেছে। কমেছে সবধরনের মুরগি ও মাছের দর। দু-একটি সবজি ছাড়া বেশিরভাগ সবজিরই দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। ডিমের দামও আগের মতো কম।

এদিকে, পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর বিষয়ে বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এবার মৌসুমে বেশ কম দর ছিল পেঁয়াজের। ফলন ভালো হওয়ায় দেশি পেঁয়াজের কেজি সর্বনিম্ন ৩০ টাকায় নেমেছিল। এরপর কিছুটা বেড়ে ঈদের পরও মান ও আকার ভেদে ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে এখন দর উঠেছে ৬০-৬৫ টাকায়।

বাংলা বাজারের বিক্রেতা আরিফ হোসেন বলেন, ঈদের পর প্রায় প্রতিদিন পাইকারি বাজারে একটু একটু করে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। সব হিসাবে নিলে, গত দুই সপ্তাহে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ২০ টাকা বেড়েছে। এখন পাইকারিতে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৪ থেকে ৫৮ টাকায়।

এদিকে, গত মঙ্গলবার থেকে বাজারে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা ও পাম তেলের দাম ১২ টাকা বেড়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ১৮৯ টাকা, যা আগে ছিল ১৭৫ টাকা। পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২২ টাকা, যা ছিল ৮৫২ টাকা।

বোতলজাত তেলের পাশাপাশি খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের নতুন দাম হবে প্রতি লিটার ১৬৯ টাকা, যা ছিল ১৫৭ টাকা।

বাজার রোডে আল-আমীন নামের একজন ক্রেতা বলেন, পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকা ও তেলের দাম ১৪ টাকা বেড়েছে। তাহলে একটি পরিবারের প্রায় ২০০ টাকা খরচ বাড়ছে এই দুটি পণ্যের পেছনেই। তাহলে আমাদের মধ্য-মধ্যবিত্ত মানুষ কীভাবে খরচ সমন্বয় করবে?

তবে এখন মাংসের বাজারে অনেকটা স্বস্তি আছে। ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকে বাড়তে থাকে মাংসের দাম। তখন প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা দরে। একইভাবে সোনালি জাতের মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ৩৫০ থেকে ৩৭০ টাকা দরে। শুক্রবার বাজারগুলোতে সোনালি কক মুরগি ২৮০ টাকা, সোনালি হাইব্রিড ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাল লেয়ার মুরগি ২৮০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৭০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৬৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

একইভাবে কিছুটা দর কমেছে গরুর মাংসের। ঈদের আগে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায়। এখন দর কমে কেজি ৭৫০ টাকায় মিলছে।

বেশ কয়েক সপ্তাহ নিম্নমুখী ডিমের দরে তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা দামে। মাসখানেক ধরেই এই দামের আশপাশে রয়েছে ডিমের দর।

অস্থিরতা কমেনি চালের বাজারেও। বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট ৮৬-৯০ টাকা, আটাইশ ৬০-৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকায়।

বাজারগুলোতে ইলিশের দামে উত্তাপ ছড়ালেও অন্যান্য মাছের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। ৫০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ মাছ ১৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ৭০০/৯০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ ২০০০/ ২৬০০ টাকা এবং এক কেজি ইলিশের দাম ২৮০০/৩০০০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। অন্যান্য মাছের মধ্যে এক কেজি চাষের শিং মাছ (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, দেশি মাগুর ৮০০ থেকে হাজার টাকায়, মৃগেল ৩৬০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাষের পাঙাশের কেজি মিলছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকায়, চিংড়ি প্রতি কেজি ১০০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়, বোয়াল প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

বড় কাতল ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, পোয়া মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, কৈ মাছ (চাষের) ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, মলা ৬০০ টাকা, শোল মাছ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে মাছ ৮০০ টাকা, কোরাল মাছ ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

Post Comment

YOU MAY HAVE MISSED